Categories
ইউরোপ

নিশিথ সূর্যের দেশে

হাবিব রহমানঃঅনিন্দ সুন্দর প্রকৃতি আর ছবির চেয়েও সুন্দর দেশ নরওয়ে।দেশটির উন্নত জীবন যাপন ,অসাধারণ জীব বৈচিত্র ,সমৃদ্ধ ইতিহাস আর সংস্কৃতি সারা বিশ্বের পর্যটকদের কাছে টানে।নরওয়েকে বলা হয় নিশিথ সূর্যের দেশ।অর্থাৎ মধ্যরাতেও এখানে সূর্যের দেখা মেলে। মধ্যরাতের সূর্য হচ্ছে এমন একটা ঘটনা যখন টানা ২৪ ঘন্টাই সূর্য দিগন্ত রেখার উপর ঝুলে থাকে।অর্থাৎ ঐ সকল অন্চল সমূহ ২৪ ঘন্টাই সূর্যের আলো পায়।আর এই সময়টা হচ্ছে ১৯ এপ্রিল থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত।তবে মধ্য রাতের সূর্য সবচেয়ে ভালো দেখা যায় ২১ জুন তারিখে। আবার একইভাবে সূর্য যখন দিগন্ত রেখার নীচে অবস্হান করে তখন এই অন্চল সমুহে ২৪ ঘন্টাই রাতের অন্ধকার থাকে।তবে এটাকে ঠিক অন্ধকার না বলে বলা যায় গোধূলির আলো ।
নিশি রাতে সূর্য দেখা যায় কেন বিজ্ঞানীরা এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।তাদের মতে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করছে।এই আবর্তনের সময় পৃথিবী নিজ অক্ষের উপর ২৩.৫ ডিগ্রী হেলে থাকে।কখনো হেলে থাকে উত্তর গোলার্ধের দিকে ।কখনো বা দক্ষিন গোলার্ধের দিকে।যখন যে গোলার্ধ সূর্যের দিকে থাকে কখন সে গোলার্ধে সূর্যরশ্মি খাড়াভাবে পড়ে এবং দীর্ঘ সময় সূর্যের আলো পাওয়া যায়। ফলে দিন বড় হয় আর রাত ছোট হয়।অক্ষাংশ যত বেশী হয় দিন তত বড় হয়।বেশী অক্ষাংশে অবস্হিত জায়গাগুলোতে গ্রীস্মকালে সূর্য অস্ত যায়না। তখন মেরু থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্হিত জায়গা গুলোতে কয়েকসপ্তাহ পর্যন্ত টানা সূর্যাস্ত ঘটেনা।আর মেরু অন্চলে সূর্য ডুবেনা ৬মাস।উত্তর মেরুতে মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর টানা ছয়মাস দিন থাকে।আর এ সময় দক্ষিণ গোলার্ধে টানা ছয়মাস থাকে রাত।অর্থাৎ দক্ষিণ গোলার্ধে যখন দিন তখন উত্তর গোলার্ধে রাত।আর এই আশ্চর্য ঘটনার কারণ একটাই তা হলে পৃথিবীর হেলে থাকা।
নরওয়ে ছাড়াও উত্তর গোলার্ধের আরো কয়েকটি দেশ যেমন সুইডেন,ফিনল্যান্ড এবং আইসল্যান্ডেও এই একই ঘটনা ঘটে থাকে।তবে নরওয়ের বেশীরভাগ অন্চল উত্তর গোলার্ধের অন্তরভুক্ত বিধায় এই দেশটিতে সূর্যের আলো সবচেয়ে বেশী সময় ধরে পাওয়া যায়।যেজন্য নরওয়ে ই নিশিথ সূর্যের দেশ হিসেবে পরিচিত।তবে নিশি রাতের সূর্য দেখা ছাড়াও এই দেশটির রয়েছে বিস্ময়কর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য,চমতকার সুন্দর সমুদ্রখাড়ি যা ফিয়র্ড নামে পরিচিত।রাতের আকাশজুড়ে বর্ণিল আলোর খেলা বা অরোরা বোরিয়ালিস ।আছে অবিশ্বাস্য সুন্দর সুউচ্চ পর্বত শ্রেনী ।আছে হাজার হাজার নয়নাভিরাম হ্রদ।সেসব হ্রদের পাড়ে ছবির মত সুন্দর জেলেদের গ্রাম আর সবুজের সমারোহ।এসব হ্রদে পাওয়া যায় ইউরোপের সবচেয়ে সুস্বাদু স্যামন মাছ।এছাড়া নরওয়ে শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য নয় এর রয়েছে বর্নিল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য,নজরকারা স্কান্ডিনেভিয়ান স্হাপত্য ।আর এসব দেখার জন্য প্রতি বছর সারা বিশ্বের পর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে।এই যেমন নিউইয়র্ক থেকে আমি ছুটে এসেছি এই নিশিথ সূর্যের দেশটি ঘুরে দেখার জন্য।
আমি নরওয়ে ভ্রমনের জন্য জুলাই মাসটাকেই বেছে নিয়েছি।এতে এক ঢিলে অনেক পাখী মারা যাবে। নিশিথ রাতের সূর্যতো দেখা যাবেই একই সাথে উপভোগ করা যাবে নরওয়ের গ্রীস্মকালটাকেও।এ দেশের গ্রীস্মকালটা হয় দারুন সুন্দর।কড়া রোদে বরফ গলে হিমবাহ হয়ে যায়।পাহাড়ি ঝর্নারা গান গায়।রঙ বে রঙের ফুল ফুটে রঙিন হয়ে উঠে প্রকৃতি।
নিউইয়র্কের জেএফ কে বিমান বন্দর থেকে ৭ ঘন্টা ১৫ মিনিট ওড়ে নর্স আটলান্টিক এয়ারওয়েজের বিমানটি পাখা নামালো নরওয়ের গাডারমেনন বিমানবন্দরে ।ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলি ভ্রমনে আমেরিকান পাসপোর্টধারীদের জন্য কোন ভিসার প্রয়োজন হয়না।শুধুমাত্র পাসপোর্ট কন্ট্রোলে ইমিগ্রেশন অফিসারকে একটু দেখা দিয়ে পাসপোর্টে একটা এন্ট্রি সিল নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে এলাম বাইরে।
আজকাল বিদেশ ভ্রমন তেমন কঠিন নয়।বিশেষ করে ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে। সবাই যেন সাহায্যের জন্য মুখিয়ে থাকে।প্রতিটা দেশের বিমান বন্দর থেকে মেইন সিটিতে যাবার জন্য ট্রেন বাসের ব্যবস্হা আছে।এতে খরচ লাগে কম।আর টেক্সিতো আছেই।
ইনফরমেশন বুথ আছে প্রতিটি এয়ারপোর্টে। তাদের জিজ্ঞেস করলেই বা ঠিকানা দেখালেই সহজে কিভাবে যাওয়া যাবে পরামর্শ দেয়।ট্রেনের টিকিট কাউন্টারেও লোক থাকে সাহায্যের জন্য।
এয়ারপোর্টের ইনফরমেশন সেন্টারে আমার হোটেলের ঠিকানা দেখাতেই বলে দিলো ট্রেন বাসে দুটোতেই যাওয়া সম্ভব।গাড়ী থেকে নেমে ৫মিনিট হাঁটলেই হোটেল।
গাডারমেনন এয়ার পোর্ট থেকে নরওয়ের রাজধানী অসলোর দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। দ্রুতগতির ট্রেনে অসলো পোঁছতে সময় লাগে মাত্র ২০ থেকে ২৫ মিনিট ।তাই ট্রেনেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। চমতকার ট্রেন।রাস্তার দু ধারের সবুজ প্রকৃতি, মাঝে মাঝে গম ও আলুর ক্ষেত ,পাহাড়ি উঁচু নিচু রাস্তা দেখতে দেখতে কখন যে এই ৫০ কিলোমিটারে রাস্তা পেরিয়ে গেলাম টেরই পাইনি।
ট্রেন থেকে নেমে জিপিএস ফলো করেই চলে এলাম হোটেলে।
শংকায় ছিলাম সাত সকালে হোটেলে রুম পাবো কিনা।কারণ পৃথিবীর সব দেশেই চেক ইন টাইম বিকেল ৩টায়।তবে রুম খালি থাকলে এবং রিসেপসানে হ্রদয়বান কেউ থাকলে সাধারণত সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। বিশেষ করে তারকা হোটেলগুলোতে রুম সাধারণত খালি থাকেই।আর এসব হোটেলের রিসেপসানে যারা থাকেন তারাও ভালো কাস্টমার কেয়ার করেন।অসলোতে আমার হোটেল ছিলো পার্ক হন বাই রেডিসন।রিসিপসানে হাজিরা দিতেই চেহারায় ক্লান্তির ছাপ আর হাতে আমেরিকান পাসপোর্ট দেখেই সম্ভবত সুন্দরী সেবিকার মায়া লাগলো।কোন কথা না বলেই রুম কার্ড দিয়ে দিলেন।সাথে এও জানালেন রেস্টুরেন্ট এখনো বন্ধ হয়নি।তাড়াতাড়ি করলে ব্রেকফাস্টটাও সেরে নিতে পারবো।
অফিসিয়াল ট্যুর শুরু হবে কাল থেকে।তাই কোন তাড়া ছিলোনা।রুমে লাগেজ রেখে হাত মুখ ধুয়ে দ্রুত নাস্তা সেরে রুমে ফিরে এলাম।দীর্ঘ বিমান ভ্রমণের ক্লান্তিতে হোটেলের নরোম বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই রাজ্যের ঘুম নেমে এলো দুচোখে ।
বিকেলের দিকে বেরোলাম শহরটা ঘুরে দেখতে। চারদিকে একটা অদ্ভুত শান্ত পরিবেশ।রাস্তায় গাড়ীর হর্ন নেই।চিৎকার চেচামেচি নেই।ইউরোপের অনেক দেশ ভ্রমন করেছি।মনে হচ্ছিলো এর আগে এত নীরব দেশ আর দেখিনি।ভাবছি একটা শহর কি ভাবে এতটা নীরব আর শুনশান হয়।মনে হচ্ছিলো যেন কান পাতলে মানুষের নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যাবে।আগেই জেনেছিলাম নরওয়ে যেমন নীরব,শান্ত দেশ, তেমনি মানুষ ও শান্তিপ্রিয়।ঝুট –ঝামেলাহীন জীবন তাদের পছন্দ। মাত্র কয়েক লাখ লোকের বাস অসলো শহরে। মানুষও প্রকৃতি এখানে হাত ধরা ধরি করে চলে।
রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে একটা জিনিষ দেখে খুবই চমত্কৃত হচ্ছিলাম।তা হলো সকল জায়গায় ইংরেজির ব্যবহার। যে কোন সাইন বা যে কোন কিছু নরওয়েজিয়ান ভাষার পরেই ইংলিশে লেখা।তাই কোনটা কিসের দোকান তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিলোনা।
শৈল্পিক ও আভিজাত্যমণ্ডিত বাড়িগুলির আকৃতি ও নির্মাণশৈলী, পথের দু’পাশে সুদৃশ্য, সুসজ্জিত স্বল্প আলোকিত রেস্তরাঁগুলিও শহরের সৌন্দর্য বর্ধন করেছে অনেকাংশে। এখানকার বাসিন্দারাও পোষাক পরিচ্ছদে খুবই ফ্যাশনদুরস্ত ও পরিপাটি। সবাইকে দেখাচ্ছিলো প্রাণোচ্ছল ও খোশমেজাজি।পাথর বাঁধানো ঝকঝকে পথের দু’পাশে বিশালাকায় সুদৃশ্য গামলা আকৃতির টবে থরে থরে মরসুমি ফুল সাজানো। রাস্তায় একটু পর পর দেখা যাচ্ছিলো পুষ্পশোভিত উদ্যান।
অসলোর প্রশস্ত রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছিলাম। রাস্থা ঘাট বেশ পরিচ্ছন্ন। হাঁটাপথ আর সাইকেল চালানোর আলাদা রাস্তা। রাস্তার পাশে অনেক গর্জিয়াস ভবন। সাম্প্রতিককালে তৈরি ভবনগুলিতে আধুনিক স্থাপত্য শৈলীর ছাপ। রাস্তায় গাড়ি-ট্রাম পাশা পাশি চলছে।সড়ক আর রেলপথ অসলো শহরকে জালের মতো ছেয়ে রেখেছে। শহরের পুরো রেলপথ মাটির নীচে। রাস্তার পাশে একটু পর ক্যাফে-রেস্তোরা। রেস্তোরার সামনে খাবারের টেবিল সাজানো।নানা কিছিমের দোকানপাট-পোশাক, সৌন্দর্য প্রসাধনী। চার পাশে ভারি সুন্দর রকমারি স্থাপনা। সে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। দেখতে বড় ভাল লাগে।
একটু হাঁটতেই চোখে পড়লো জগৎবিখ্যাত নোবেল পিস সেন্টার। এই ঐতিহ্যময় ভবনের হলে বিশ্ব শান্তি নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়। ভবনটা তেমন আহামরি কিছু নয়।তেমন চাকচিক্য নেই।সাদামাটা এক দ্বিতল ভবন। সামনেই এর প্রতিষ্ঠাতা আলফ্রেড নোবেলের ভাস্কর্য। ঘুরে ঘুরে কক্ষ গুলো দেখতে থাকি।কমিটি রুম,ঘোষনা কক্ষ আরো কতো কি! প্রতিবছর ১০ই ডিসেম্বর এখানে অনুষ্ঠান করে সনদ আর ট্রফি দেয়া হয়,।এখানেই আমাদের গর্ব ড.ইউনুস এসে নোবেল পুরস্কার গ্রহন করেছিলেন।মনে মনে শিহরণ অনুভব করি।
নোবেল পুরস্কারের অন্যান্য শাখার পুরস্কার দেওয়া হয় সুইডেনের রাজধানী স্টকহোম থেকে। তবে আলফ্রেড নোবেল তাঁর উইলে সবচেয়ে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বিভাগ শান্তি পুরস্কারের দায়িত্ব দেন নরওয়ের সরকারকে। এর ভিত্তিতে গঠিত হয় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি। এই কমিটিই এক শ বছরের বেশি সময় ধরে অসলো থেকে শান্তি পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে আসছে।
ভবনের অকপাশে বড়সড় লবি। একপাশে টিকেট কাউন্টার আর স্যুভেনির শপ বা স্মারক বিক্রয়কেন্দ্র। টিকেট কেটে নিচতলার গ্যালারিতে ঢুকি। করিডর ধরে এগোতেই দেখা মিলল নোবেল পুরস্কারের কয়েনের। ১৮ ক্যারেটের সোনা দিয়ে তৈরি এই কয়েনকে কাচের ওপাশে রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য এই পুরস্কারটি দেওয়া হয়েছিল ১৯২১ সালে নরওয়ের রাজনীতি গবেষক ক্রিশ্চিয়ান এল ল্যাংকে।
জাদুঘরের প্রাণকেন্দ্র ‘নোবেল ফিল্ড’। কাচ দিয়ে ঘেরা হলটি নীলচে আলোয় আলোকিত। ঘরজুড়ে আইপ্যাডের সমান অনেক স্ক্রিন, স্ট্যান্ডের ওপর বসানো। অন্ধকার ঘরে নীলচে আলো আর জ্বলজ্বলে স্ক্রিন মিলে অন্য রকম একটা আবহ তৈরি হয়েছে।১৯০১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যাঁরা শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন, তাঁদের সবার প্রোফাইল স্ক্রিনে ভেসে উঠছে। প্রত্যেকেরনিজস্ব স্ক্রিন রয়েছে। শিরিন এবাদি থেকে মালালা ইউসুফজাই। নেলসন ম্যান্ডেলা থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দালাই লামা থেকে বারাক ওবামা। নানা দেশের পর্যটক রয়েছেন ঘরটিতে, সবাই ঘুরে ঘুরে দেখছেন। তবে নিজের দেশের নোবেল লরিয়েটদের সামনেই বেশি সময় ব্যয় করছেন। ড. ইউনূসের স্ক্রিনের সামনে আমরাও বেশ কিছুক্ষণ থাকলাম। ইউনূসের ছবি, তাঁর নোবেল পাওয়ার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আর নানা উক্তি দেখানো হচ্ছে।
নোবেল হল থেকে বের হয়ে গেলাম ‘দ্য ওয়াল পেপার’ নামের দেয়ালটি। এই দেয়ালে পাঁচটি বড় বড় ইন্টার-অ্যাকটিভ স্ক্রিন রয়েছে। নোবেল লরিয়েটদের বিস্তারিত জীবনী ও কাজের বিবরণ এখানে দেওয়া আছে। ভিডিও, এনিমেশনের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁদের অবদান তুলে ধরা হয়। এই দেয়াল ধরে একটু সামনে গেলে ‘নোবেল চেম্বার’। এই চেম্বারের ইন্টার-অ্যাকটিভ স্ক্রিনে পাওয়া যাবে আলফ্রেড নোবেলের বর্ণিল জীবনকাহিনি।
দোতলা দেখা শেষ করে নিচে নামলাম। স্যুভেনিরের খোঁজে ঢুঁ মারলাম টকটকে লাল রং করা স্যুভেনির শপে। বিশ্বের নানা প্রান্তে তৈরি হস্তশিল্প বিক্রি হচ্ছে। আরো আছে নোবেল লরিয়েটদের ওপর লেখা বই, তাঁদের ছবি সহ পোস্টকার্ড, উক্তি ইত্যাদি। ভীড়ের মাঝ থেকে খুঁজে আমাদের ড.ইউনুসের ছবি সম্বলিত পোস্টকার্ড খুঁজে বের করে বেশ কয়েকটা কিনলাম।এসব বিক্রির অর্থ দাতব্য কাজে ব্যয় করা হয়। নোবেল কয়েনের আদলে তৈরি কয়েন চকোলেট পাওয়া যায় এখানে।
আমাদের পরবর্তী গন্তব্য Akershus castle. ক্যাসেলে ঢুকার পথেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাংলিন ডি রুজভেল্ট এর মুর্তি।তিনি একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি চার চারবার ক্ষমতায় ছিলেন।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দেয়া এ’প্রসিডেন্টকে জর্জ ওয়াশিংটন ও আব্রাহাম লিংকনের পর সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারি রাষ্ট্র নায়ক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নীচে পাথরে খোদাই করা তথ্য থেকে জানা যায় এখানে তিনি ১৯৫০ সালে এসেছিলেন।
কিছু দূর হেঁটেই পৌঁছে গেলাম সমুদ্রের ধারে অসলোর বিখ্যাত ন্যাশনাল অপেরা হাউস। এটি অসলো শহরের একটা বড় আকর্ষণ।অসলো ফিয়র্ডের মাথার কাছে অবস্থিত এই ভবনটি মুলত বানানোই হয়েছে অপেরা এবং ব্যালে ড্যান্সের জন্য। ভিতরটা খুব কারুকার্যময় আর চমৎকার করে সাজানো।ভেতরে ঢুকার জন্য কোন ফি নেই।পর্যটকরা চাইলেই ভবনের ছাদে গিয়ে সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।আগাগোড়া পাথরে নির্মিত অপেরা হাউসকে পড়ন্ত বিকেলের নরম আলোয় ভারী স্নিগ্ধ, মনোরম দেখাচ্ছিলো।সামনের বিস্তীর্ণ ঢালু চাতাল, সবটাই মসৃণ ধূসর হলদেটে পাথরে মোড়া। বহু মানুষ বৈকালিক ভ্রমণের জন্য এখানে আসেন ও সময় কাটান সমুদ্রের মুক্ত, নির্মল বাতাসকে সঙ্গী করে। নিবিড় ঘন নীল পর্বতমালা দিয়ে তিন দিক বেষ্টিত সমুদ্র। ছোট ছোট উজ্জ্বল রঙের পালতোলা নৌকার দল আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে পাহাড়ঘেরা সমুদ্রবক্ষকে। পর্যটকদের কাছে নরওয়ের বিশেষ আকর্ষণ পাহাড় ও সমুদ্রের এই সঙ্গম।
ঢুঁ মারলাম জাতীয় আর্ট গ্যালারিতে।এখানে মূলত স্ক্যান্ডিনেভিয়ান শিল্পীদের চিত্র কর্ম রাখা আছে॥তবে পশ্চিম ইউরোপের কালজয়ী স্রষ্টাদের চিত্রও দেখা গেল বেশ কিছু। পাবলো পিকাসোর জন্য একটি পৃথক কক্ষ বরাদ্দ রয়েছে। পিকাসোর জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে তাঁর ভাবনা, অনুভূতি, উপলব্ধি প্রতিফলিত হয়েছে এ সব চিত্রে।
হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত লাগছিলো।পাশেই একটা ক্যাফের সাইন দেখে ভেতরে ঢুকলাম।ছোট্ট ক্যাফের প্রায় সবগুলি টেবিলেই লোকজন বসা।হঠাৎ এক পাশের টেবিলে একজনের চোখে চোখ পড় লো।প্রথম দেখাতেই বুঝলাম তিনি একজন বাংলাদেশী।আমাকে হাত ইশারায় কাছে ডাকলেন।পাশের একচি চেয়ার টেনে আনলেন আমার বসার জন্য।পরিচয় দিয়ে বল্লেন,ঢাকা মানিকগন্জে তার বাড়ী।ইউনিভার্সিটি অব অসলোতে তিনি পড়া শোনা করছেন।বিদেশে বাংগালী মাত্রই স্বজন একথাটা তিনি আরো একবার প্রমান করলেন।
তিনিই আমার জন্য কফির অর্ডার দিলেন।কফি পান করতে করতে অনেক কথা চলে তাঁর সাথে।জানালেন অনেক বাংলাদেশী ছাত্র এখানে পড়াশোনা করেন।১৮১১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় টি নরওয়ের অন্যতম সেরা এবং প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় ।এতে ৮টি ফ্যাকাল্টির অধীনে অনেকগুলি ডিপার্টমেন্ট রয়েছে।ইংরেজীতে মাস্টার্সে প্রায় ৭০ টি কোর্স বা প্রোগ্রাম রয়েছে।পিএইচডির জন্য রয়েছে ৮টি স্টাডি প্রাগ্রাম।
ইতোমধ্যে দুজনেরই কফি পান শেষ হলে আমরা একসাথেই ক্যাফে থেকে বেরোলাম।আমার কোন আপত্তি না শুনে তিনি আমাকে হোটেল পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন
Categories
ইউরোপ

রুপিট একটি গ্রামের নাম

হাবিব রহমানঃ নিউইয়র্ক থেকে স্পেনের বার্সিলোনায় উড়ে এসেছি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তরভুক্ত একটি ছোট্ট দেশ এ্যান্ডোরাঘুরে দেখবো বলে। দেশটি উত্তর থেকে দক্ষিনে ম্বায় মাত্র ২৫ কিলোমিটার ।আর পশ্চিম থেকে পূর্বে  ৩০ কিলোমিটার। এটিফ্রান্স এবং স্পেনের সীমান্তে অবস্হিত।পুরো দেশটির সব স্ হাপনাতে মিশে আছে ফরাসী এবং স্পেনীয় স্হাপত্যের নিদর্শন।এটিএকচি ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীদের দেশ।যেখানে জনসংখ্যা কঠোর নিয়মের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠে।এন্ডোরা খুব শান্ত একটি দেশ।অপরাধ নেই । হৈহল্লা নেই । বিক্ষোভ মিছিল নেই। দেশটি স্কি রিসোর্টের জন্য বিখ্যাত।সুন্দর ল্যান্ডস্কেপ,মৃদু জলবায়ু সারা বছরবিশ্বের পর্যটকদের আকর্ষন করে।

পিরোনিজ পর্বতমালার উপত্যকায় গড়ে ওঠা এ্যান্ডোরাতে কোনো এয়ারপোর্ট নেই। ফ্রান্স বা স্পেনে নেমে সড়ক পথে দেশটিতেআসতে হয় ।তবে স্পেনের গিরোনা-কস্টা ব্রাভা এয়ারপোর্টই দেশটি থেকে কাছে।আমি  নেমেছি স্পেনের বার্সিলোনা এয়ারপোর্টে।এখানকার একটি ট্যুর কোম্পানীর সাথে চুক্তি করে এসেছি তারা সড়ক পথে আমাকে এন্ডোরা ঘুরিয়ে আনবে।

বার্সিলোনায় ট্যুর কোম্পানীর অফিসের সামনে থেকে সকাল ৭টায় বাস ছাড়ার কথা।এখন শীতের সময়।সকাল ৭টা মানে খুবভোর সকাল।আমি সব জায়গায় সময়ের আগেই পৌছে যাই।এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।ট্যুর কোম্পানীর অফিসের সামনেযখন পৌঁছলাম তখনো অন্ধকার কাটেনি।অফিসের দরজাও খুলেনি।অফিসটা বড়রাস্তা থেকে একটু ভিতরে একটা গলিরভেতরে। কেমন যেন একটা নীরব এলাকা।রাস্তা দিয়ে তখনো তেমন লোক চলাচল শুরু হয়নি ।আমাকে একা দাড়িয়ে থাকতেদেখে হঠাৎ একটা পুলিশের গাড়ি এসে থামলো।দুজন নারী পুলিশ বেরিয়ে এসে জানতে চাইলো এই সাত সকালে কি করছিআমি এখানে।সামনে ট্যুর কোন্পানীর অফিসটা দেখিয়ে বল্লাম ওখান থেকে আমি এন্ডোরা ভ্রমনে যাবো। পুলিশ জানালোজায়গাটা তেমন ভালো নয়।ড্রাগ এডিক্টরা এখানে ঘোরাফের করে।সুযোগ পেলে তারা লোকজনের জিনিসপত্র কেড়ে নেয়। তারাপরামর্শ দিলো  মোড়ের কোনায় একটা ক্যাফে আছে সেখানে গিয়ে বসতে।বাস ছাড়ার সময় এখানে চলে আসতে বলে তারা চলেগেলো।

পুলিশের পরামর্শমত  ক্যাফেতে গিয়ে বসলাম।সময় কাটানোর জন্য গরম রফি এবং হালকা নাস্তার অর্ডার দিলাম।খেয়ে দেয়েসময়ের একটু আগেই পৌছে গেলাম ট্যুরিস্ট অফিসে।ততক্ষণে কর্ম চন্চল হয়ে উঠেছে অফিসটা।অনেক পর্যটক এসে ভীড় করেছেঅফিসে। বিভিন্ন জায়গায় তাদের ডেস্টিনেশন।

কাউন্টারে আমার টিকিটটি দেখালে কর্তব্যরত একজন  তরুনি খুব হাসিমুখেই দুঃসংবাদটি দিলেন।জানালেন এন্ডোরা যাবারপথে পাহাড়ি রাস্তায় ধ্বস নামার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্হা  অচল হয়ে আছে কাল থেকে।আজও কোন বাস ছেড়ে যাবেনা  এ্যানডোরার উদ্দেশ্যে।তবে সাথে আর একটা সু সংবাদ দিলো যে চাইলে এই একই টিকিটে আমি স্পেনের একটি  বিখ্যাতপাহাড়ি গ্রাম রুপিট ভ্রমনে যেতে পারি।পাহাড়ের চুড়ায় অবস্হিত মধ্যযুগের এই গ্রামটি দেখতে সারা বিশ্বের পর্যটকরা এসে ভীড়করেন।

যদিও আমি এ্যান্ডোরা ভ্রমনের উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছিলাম।তবে রুপিট সম্পর্কে আমার জানা ছিলো।এটি একটি সেরা পর্যটন  গ্রাম।জাতিসংঘ পরিচালিত ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেসান যে সেরা গ্রামের তালিকা তৈরি করেছে রুপিট তার একটি।বিশ্বজুড়েএ রকম ৩২ টি গ্রামের তালিকা করেছে সংস্হাটি।প্রতিটি দেশকে বিবেচনার জন্য তিনটি গ্রামের নাম জমা দিতে বলা হয়েছিলো।কিন্তু স্পেনের নাম দেয়া তিনটি গ্রামের মধ্যে তিনটিই তালিকায় চলে এসেছে।এর একটি  হলো রুপিট।

মুখে অপ্রসন্ন ভাব দেখালেও রুপিট  ভ্রমনে আমার আগ্রহের কমতি ছিলোনা।তাই দ্রুত গিয়ে বাসে চেপে বসলাম।পরে দেখেছি এসূযোগ মিস করলে বিরাট একটা ভুল হতো।একটা চমতকার অভিজ্ঞতা থেকে বন্চিত হতাম।

শহরের ভিড় ছেড়ে গাড়ি মোটরওয়েতে পড়লো,।পেরিয়ে যাচ্ছিলাম একের পর এক গ্রাম, প্রান্তর, ফসলের মাঠ। ইউরোপের সবদেশের কান্ট্রিসাইড ই ছবির মত সুন্দর।দিগন্তবিস্তৃত মাঠ বা ফসলের ক্ষেত, দূরে দাঁড়িয়ে থাকা একটা দুটো ঘরবাড়ি, মাঝে মধ্যেব্রিজের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝিরঝিরে নদী, চরে বেড়ানো ভেড়ার দল, কখনো দেখতে পাওয়া যায় বহুদূরের কোনো গির্জারচুড়া…..। শহরের কেন্দ্র থেকে একটু বাইরে গেলেই সবুজ আর সবুজ এবং দূরে দূরে সাজানো লোকালয়। বেশ প্রশস্ত আয়তনেলোকজন বসতি নির্মাণ করে। সবুজ বৃক্ষরাশি আর লতা গুল্ম সবকিছু যেন মিলেমিশে একাকার এখানে। 

গাড়ি ক্রমেই একে বেকে চলছে পাহাড়ি রাস্তায় ।আস্তেআস্তেঘুর্ ঘুরে  উপরে উঠছে।রাস্তাটি অনেকটা জলপাইগুড়ি থেকেদার্জিলিং যাবার রাস্তার মতো।কখনো চুলের কাঁটার মত বাঁক।দুটো গাড়ি কোন ক্রমে পাশ কাটাতে পারে।নীচে গভীর খাত।একটুএদিক ওদিক হলেই পপাত ধরনী তল।

গাইড জানালো রুপিট নামের ছোট্ট এই পাহাডি গ্রামটি মধ্যযুগে গড়ে উঠেছে।এটি সমতল খেকে ৮২২ মিটার উচুতে অবস্হিত।রুপিট একটি ল্যাটিন শব্দ।যার অর্থ রক বা পাথর।গ্রামের একমাত্র চার্চটি পাথর দিয়ে তৈরি  হয়েছে ১০ম শতকে।বাড়ি ঘরগুলোপাথর দিয়ে নির্মিত।রাস্তা গুলোও পাথরদিয়ে তৈরি।স্পেন সরকার গ্রামের সেই পুরনো ঐতিহ্যটা ধরে রেখেছে। অধিবাসী অল্পসংখ্যক হলেও তাদের জন্য সব নাগরিক সুয়োগ সুবিধা যেমন হাসাপাতাল,বিদ্যুৎ ব্যবস্হা,আধুনিক রাস্তা ঘাট সব তৈরি করেদিয়েছে।

একসময় আমাদের বাস এসে থামলো গ্রামের প্রবেশ মুখে।গ্রামের বাইরে থাকবে বাস।শুরুতেই একটা হ্যাঙ্গিং ব্রীজ ।নীচে কলকল রবে হয়ে চলেছে স্ফটিক স্বচ্ছ রুপিট নদী।এটা পেরিয়ে ঢুকতে হবে গ্রামে।এই নিরাপত্তা ব্যবস্হা সেই প্রাচীন কাল খেকে যাএখনো অটুট আছে।তবে ব্রীজটি নতুন করে নির্মিত হয়েছে ১৯৪৫ সালে।রাতের বেলা ব্রীজটি উঠিয়ে দিলে অবাঞ্ছিত কেউ ঢুকতেপারবেনা গ্রামে।

প্রকৃতি কন্যা রুপিট যেন আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো এক অন্য রকম মুগ্ধতা নিয়ে।শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ।গ্রামটিকেদেখে মনে হচ্ছিলো প্রকৃতি যেন তার সকলসৌন্দর্য উজাড় করে ঢেলে দিয়েছে ।রুপিটকে ভালো লেগে গেলো প্রথম দেখায়।

নিচের দিকে তাকালে ভালো করে কিছু চোখে পড়ে না। ধাপে ধাপে উঠে এসেছে পাহাড়। মেঘ আর কুয়াশার ফাঁকে ফাঁকে  কোথাওকোথাও সবুজ প্রকৃতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ।

একটু হেটে আমরা আসলাম একটা পাহাড়ি ঝর্না দেখতে।প্রকৃতির কোলে ঝর্নাটি যেন একটা অন্য রুপ নিয়ে চোখে ধরা দিলো।পাহাড়ের বুক চিরে আছড়ে পড়ছে প্রবহমান জলধারা। গুঁড়ি গুঁড়ি জলকনা আকাশের দিকে উড়ে গিয়ে তৈরি হচ্ছে কুয়াশারআভা। স্রোতধারার শীতল কলতানে নিক্কন ধ্বনির উচ্ছ্বাস ছড়িয়েছে চারপাশ। যেন সবুজ অরণ্যের প্রাণের ছোয়ার পরশ এঁকেছেকেউ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপূর্ব নৈসর্গিক একটা আবহ সৃস্টি করেছে চারপাশে।গাইড একটু সময় দিলে ঝর্নার জলে পা ভিজিয়েবসে রইলাম কিছুক্ষণ।

গোটা গ্রামটাই পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু ভরা মৌসুম নয় বলে তত ভিড় জমেনি। ঝর্নার জলে পা ভিজিয়ে বসে থেকেবেশ ভালোই  লাগছিলো।কিছু জলচর পাখির ডানা ঝাপটানো আর বাতাসের শব্দ ছাড়া কোনো আওয়াজ নেই।সবাই যেনকেমন একটা মৌনতায় মগ্ন।

রুপিট থেকে  অনেকগুলি  হাইকিং স্পট চলে গেছে জঙ্গলের ভিতরে।গাইডের নেতৃত্বে ঘন্টাখানিক হাইকিং করে সবাই ফিরেএলাম একটি রেস্টুরেন্টে ।প্রত্যেকেই নিজ নিজ পছন্দমত খাবার অর্ডার দিলো।আমি আগেই গাইডকে বলে রেখেছিলাম যে মাংসজাতীয় কিছু খাবোনা।সেজন্য গাইড আমার জন্য অর্ডার করলো টরটিলা দে পটাটা নামের একটি খাবার।এটাকে বলা যায়আলুর অমলেট।সাথে সালাদের মত পেঁয়াজের কুচি এবং অ্যাসপারাগাস আর এক বাটি নুডল স্যুপ।পরে এক কাপ গরম কফিখেয়ে সমাপ্তি।

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসছিলো ধীর লয়ে।

আমরা বাসে গিয়ে বসলাম।বাস ছুটে চল্লো পাহাড়ি পথ ধরে বার্সিলোনার পথে।