Categories
ইউরোপ

মেরুজ্যোতি দর্শন

আজ সারাদিন আইসল্যান্ডে অনেক দর্শনীয় স্থান ঘুরে বেরিয়েছি। স্বাভাবিকভাবেই শরীর ক্লান্ত ও অবসন্ন। কিন্তু আজ রাতেই মেরুজ্যোতি বা অরোরা বোরিয়ালিস দেখার টিকিট কেটে এসেছিলাম নিউইয়র্ক থেকে। মূলত: এবার ইউরোপ ভ্রমণে আমাদের প্রধান আকর্ষণ ছিলো এই মেরুজ্যোতি দর্শন। আকাশ জুড়ে আলোর খেলা দেখা।
রাত ৯টায় গাইড এসে তুলে নিলো হোটেল থেকে। আগেই বলা ছিলো প্রচুর গরম জামা কাপড় পরে যাওয়ার জন্য। সবাই তা করেছি। কফি মগে করে সাথে নিয়েছি হোটেল কর্তৃপক্ষের দেয়া ধূমায়িত কফি। অনেক বড় বাস। পুরোটাই পর্যটক ভর্তি। সারা বিশ্বের নানা দেশ থেকে পর্যটকরা সমবেত হয়েছেন মেরুজ্যোতি দর্শনে।
গাইড প্রথমেই ব্রিফ করলো মেরুজ্যোতি সম্পর্কে। সুমেরু প্রভা বা মেরুজ্যোতি পৃথিবীর বায়ু মন্ডলে গ্যাসিয় কনাগেুলোর সাথে সূর্যালোকের সংঘর্ষের কারণে চার্জযুক্ত কনার ফলাফল। বাতাসে অক্সিজেন কনা একে অপরের সাথে যুক্ত হলেই সৃষ্টি হয় অরোরার আলো। আলোর রং বাতাসের কনা ও একে অপরের সাথে প্রতিক্রিয়ার ফল। অক্সিজেনের কারণে তৈরী হয় সবুজ বা গাঢ় লাল রং। নাইট্রোজেন থেকে উৎপন্ন হয় নীল ও লাল রং এবং হিলিয়াম থেকে হয় নীল ও গোলাপী রং। গাইড আরো জানান, আলোর এই খেলা চলে প্রায় ৬২০ মাইল উচ্চতায়। সুমেরু প্রভার দৃশ্য দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যায়।
এই একাডেমিক কথা-বার্তা শুনতে ভালো লাগছিলো না। ভাবছিলাম ভাগ্য প্রসন্ন হলে নিজের চেখেই সুমেরু প্রভা দেখে দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন করবো।
পেটভর্তি পর্যটক নিয়ে বাস ছুটে চলেছে সুমেরুপ্রভা দর্শনে। ভিউ পয়েন্টটা শহর থেকে বেশ দূরে নির্জন জায়গায়। শহরের আলো যাতে না পৌছায় তাই এই লোকেশন নির্বাচন। গাইড জানালো, মেরু প্রভা দেখতে কয়েকটি শর্তের প্রয়োজন। প্রথমত: মেরু বলয়ের মধ্যে সুমেরুর খুব কাছাকাছি জায়গা থেকে মেরু জ্যোতি দেখতে হবে। দ্বিতীয়ত প্রচন্ড শীতের রাত হবে হবে। তৃতীয়ত: অন্ধকার যত বাড়বে, আলোর বিচ্ছুরণ খালি চোখে তত বেশী দেখা যাবে। সর্বোপরি আকাশ ঝকঝকে পরিষ্কার হতে হবে। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ বা ¯েœা পড়লে মেরু জ্যোতি দেখা সম্ভব হবে না। যেজন্য মেরু জ্যোতি বা সুমেরু প্রভা দেখা অনেকটা ——– ্আর এ জন্য অনেককে রাতের পর রাত অপেক্ষা করতে হয়।
গাইডের কথা শুনে মনটা দমে গেলো। নিউইয়র্ক থেকে আইসল্যান্ডে উড়ে এসেছি মেরু জ্যোতি দেখবো বলে। হাতে সময় কম, ইউরোপের অন্য দেশও ভ্রমনের প্রোগ্রাম রয়েছে। আমাদের হাতে মাত্র আজকের রাতটিই। আজ যদি মেরু জ্যোতি দেখা না হয়, তাহলে আফসোস নিয়ে ফিরে যেতে হবে নিউইয়র্কে।
নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে বাস থামলো। জায়গাটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। মূল রাস্তা থেকে বেশ ভিতরে। তবে, একটু দূরে একটা ভবন। যা প্রচন্ড শীত থেকে বাঁচার আশ্রয়স্থল। বাথরুমের ব্যবস্থা আছে। আর আছে গরম কফির ব্যবস্থা।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে শত শত পর্যটক জমায়েত হয়েছে এখানে মেরু জ্যোতি দেখার আশায়। অনেক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে কেউ কেউ ছুটে যাচ্ছেন পাশের ভবনে চা-কফি খেয়ে শরীর চাঙ্গা রাখার জন্য। আমার গ্রুপের বয়ষ্ক পুরুষ-মহিলাদের পাঠিয়ে দিলাম ভবনে বিশ্রাম নিতে। বললাম- মেরু জ্যোতির দর্শণ পেলে তাদের ডেকে নিয়ে আসবো।
রাত প্রায় দুটো বাজে। প্রচন্ড ঠান্ডায় শরীর জমে যাওয়ার মতো অবস্থা। তবুও মেরু জ্যোতির দেখা নেই। হতাশ হয়ে ইতোমধ্যে দু-একটি বাস চলেও গেছে। হয়তো তারা পরদিন আসবে। আমাদের গাইড-ও বাসে উঠার জন্য তাড়া দিচ্ছিলো। তাকে অনুরোধ করলাম, আরো কিছু সময় থেকে যাওয়ার জন্য।
শীতের কামড় থেকে বাঁচতে ভেতরে গিয়ে এক কাপ কফি নিয়ে সবে চুমুক দিয়েছি। এমন সময় শুনি বাইরে থেকে চিৎকার- ‘অরোরা! অরোরা!’ কফি কাপ ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে দৌড়ে গেলাম বাইরে। দেখলাম- উত্তর আকাশে একটা সাদা আলোর রেখা। একটু পর দেখা দিলো চোখ ধাঁধানো তীব্র দ্যূতি ছড়ানো এক সবুজ আলোর নৃত্য। একটু পর রং বদলিয়ে গোলাপী ও হালকা হলুদ রং। মনে হচ্ছিলো প্রকৃতির এক লেজার বিম শো উপভোগ করছি আইসল্যান্ডের উন্মুক্ত প্রান্তরে দাঁড়িয়ে।
উপস্থিত পর্যটকরা তখন আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়ছেন। চারিদিকে ক্যামেরার শাটারের শব্দ। কেউ কেউ অরোরা-কে ক্যমেরার লং এক্সপোজারে ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।
সুমেরু প্রভার ¯িœগ্ধ আলো প্রচন্ড শীতের কষ্ট একেবারেই ভুলিয়ে দিলো। অবিস্মরণীয় এই মুহুর্তটি কোনদিন ভুলার নয়। মনভরা একরাশ তৃপ্তি নিয়ে বাসে গিয়ে বসলাম। কাল প্রসন্ন চিত্তে রওনা দেবো নেদারল্যান্ডের দিকে।

Categories
ইউরোপ

মেরু জ্যোতির দেশে

মেরুজ্যোতি, নর্দান লাইটস, সুমেরু প্রভা, অরোরা বোরিয়ালিস কত যে নাম! যে নামেই ডাকা হোক এটা প্রকৃতির এক অনন্য সৃষ্টি। আকাশে এই চোখ ধাঁধানো উজ্জ¦ল ও রঙিন আলোর যে খেলা চলে তখন সূর্যের সৌর বায়ু ও পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র এক অপরের সংস্পর্শে আসে। তীব্র সৌর ঝড়ের সময় সুমেরু প্রভা আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠে। আরো স্পষ্টভাবে দেখা যায় এই বর্ণিল আলোর ঝলক।
অনেকদিনের স্বপ্ন ছিলো সুমেরু প্রভা দেখার। পৃথিবীর যে সব দেশগুলোতে সুমেরু প্রভা দর্শন করা যায় যেমন নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, কানাডা, রাশিয়া, আইসল্যান্ড, আলাক্সা, নিউজিল্যান্ড এসব দেশের প্রায় সবগুলিতে ঘুরে এলেও সুমেরু প্রভা দেখা হয়নি। কারণ বছরের সব সময় তা দেখা যায় না। সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত এই ছয় মাস এসব দেশগুলোতে সুমেরু প্রভা দেখতে পাওয়া যায়।
গত ক’দিন আগে হঠাৎ করেই একটা আমেরিকান ট্যুর কোম্পানী যাদের সাথে আমি কাজ করি তারা জানালো একদল ট্যুরিস্ট অরোরা বরিয়ালিস বা নর্দান লাইটস দেখতে চায়। আমি তাদের দেখিয়ে আনতে পারবো কিনা। আমি এক কথায় রাজী হয়ে গেলাম। কারণ শীতের এই সময়টাতে আমার বাইরে যাওয়া হয় না বিধায় কখনো সুমেরু প্রভা দর্শন হয়নি।
৭ অক্টোবর সকালে আমার ট্যুর গ্রুপের ১২ জন সদস্য সহ জেএফকে থেকে আইসল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। বুড়োবুড়ি সহ আমেরিকার বিভিন্ন স্টেটস থেকে এসেছে এরা। এদের বেশিরভাগই রিটায়ার্ড। অবসর সময়টা তারা ‘এনজয়’ করতে ঘুরে বেড়ায় দেশ বিদেশে। আর আমার কোম্পানী ‘বাংলা ট্যুর’ এর কাজ এ ধরনের রিটায়ার্ড এবং ভ্রমণার্থীদের সহায়তা দেওয়া। ঘুরতে সাহায্য করা। ট্যুর প্রোগ্রাম বানানো, তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা। মোদ্দা কথা ট্যুরের এ-টু-জি পর্যন্ত সবকিছুর ব্যবস্থা করা।
ওয়াও এয়ারলাইনের বিমানটি প্রায় সাড়ে ছয় ঘন্টা আকাশে ডানা মেলে বিকালের দিকে নামলো আইসল্যান্ডের রিকজাভিক বিমান বন্দরে। এটি আইসল্যান্ডের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। নিউইয়র্কের আকাশে ঝাঁঝাঁ রোদ্দুর থাকলেও আইসল্যান্ডের আকাশ ছিলো মেঘাচ্ছন্ন। টুপ টাপ বৃষ্টি পড়ছিলো। সেই সাথে বাতাস আর তীব্র শীতের আক্রমন। ইউরোপ আসা যাওয়ার পথে অতীতে আমি অনেকবার এই রিকজাভিক বন্দরে স্টপ ওভার করেছি। বছরের কোন সময়ই এখানে পরিস্কার আকাশ দেখতে পাইনি।
যা হোক এয়ারপোর্ট ট্যুরিষ্ট ইনফরমেশন বুথে আমাদের হোটেলের ঠিকানা দেখাতেই তারা কাঁচের জানালা দিয়ে পাশেই পার্ক করা বাস দেখিয়ে দিয়ে বল্লো ওটা একেবারে হোটেল পর্যন্ত পৌঁছে দেবে। তারাই টিকেট কাউন্টার দেখিয়ে দিলেন। বাসের পেটে লাগেজ ঢুকিয়ে আমরা ভেতরে গিয়ে আরাম করে বসলাম। বাস ছুটে চললো আইসল্যান্ডের রাজধানী রিকজাভিক এর পথে।
এয়ারপোর্ট থেকে রাজধানীতে যেতে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব চমৎকার। প্রতি ১০ মিনিট অন্তর অন্তর বাস। ভীড় নেই বল্লেই চলে। ৫০ মিনিটের জার্নির জন্য ভাড়া দিতে হয় ৩ হাজার ৯শত ৬০ আইসল্যান্ড ক্রোনার। যা ৩৩ ইউএস ডলারের সমমান। বাসে কোন কন্ডাক্টার নেই। ড্রাইভারকে টিকিট দেখিয়ে বাসে উঠতে হয়। বসতেই ড্রাইভারের ঘোষণা প্রত্যেককেই সিট বেল্ট বাঁধতে হবে। আর ভেতরে কোন রকমের ড্রিঙ্কস এলাউড নয়।
বাস ছুটে চলছে রিকজাভিক এর পথে। দু’পাশে বাড়ীঘর নেই। বিরান মাঠ, পাথুরে অনুর্বর ভূমি। মাঝে মাঝে ঘোড়া চড়ছে। কোথাও কোথাও লেক। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো সড়ক পথের পরিচ্ছন্নতা। কোথাও কোন আবর্জনা কাগজ বা প্লাস্টিকের টুকরা পড়ে নেই। রাস্তার পাশে ছোট বড় গাছগুলোর উপর পরম যতেœর ছাপ।
প্রায় চল্লিশ মিনিট এর পর একটা বিরাট বাড়ীর সামনে বাস এসে থামলো। এটা শহরতলী। বড় বাসের সীমানা এখানেই শেষ। এগুলো শহরের ভিতর ঢুকতে মানা। এখন আমাদের উঠতে হবে মিনিবাসে। ওগুলো পৌঁছে দেবে আমাদের হোটেলে। তবে এজন্য বাড়তি কোন অর্থ দিতে হবে না।
বাস থেকে নামার সাথে সাথেই ছোট মিনি বাস এসে দাড়ালো আমাদের সামনে। ড্রাইবারই সাহায্য করলো লাগেজগুলো উঠাতে। তারপর ছেড়ে দিলো বাস। ১০ মিনিটের মধ্যেই আমাদের নামিয়ে দিলো হোটেলের সামনে।
ইউরোপ মহাদেশের একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র আইসল্যান্ড। দেশটির সরকারী নাম আইসল্যান্ড প্রজাতন্ত্র। রাজধানী রিকজাভিক। সমুদ্রপাড়ে অবস্থিত এবং ৩দিকে পানি দিয়ে ঘেরা। একেবারেই ছোট্ট একটি শহর। দেশটির উত্তরে আটলান্টিক মহাসাগর। গ্রীনল্যান্ড, নরওয়ে, স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এবং উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের সদা সক্রিয় ও ভূ-গাঠনিক প্লেটগুলোর উপরে অবস্থিত একটি আগ্নেয় দ¦ীপ। আয়তন ৩৯ হাজার র্বগমাইল। যা বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশের সমান। রাজধানী রিকজাভিক অনেকটা দার্জিলিংয়ের মত। সন্ধ্যার আগেই সারা শহর কুয়াশাচ্ছন্ন। বাতাসে শীতের আমেজ। এটি একটি অত্যন্ত ক্ষুদ্র জনসংখ্যার দেশ। মাত্র ৩ লাখ ৩২ হাজার মানুষের বসবাস এখানে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষ (১ লাখ ২২ হাজার) থাকে রাজধানী রিকজাভিক বা এর আশেপাশের এলাকায়। প্রায় ১ হাজার বছর আগে খৃষ্টীয় ৯ম শতকে ভাইকিং অভিযানকারীরা আইসল্যান্ডে বসতি স্থাপন করে। আইসল্যান্ডবাসী তাদের ভাইকিং ঐতিহ্য নিয়ে বেশ গর্ববোধ করে। প্রায় ৬০ মিলিয়ন বছর ধরে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত থেকে দ্বীপটির উৎপত্তি। এখনো দ্বীপটিতে অনেকগুলো আগ্নেয়গিরি সক্রিয় আছে। এখানে গড়ে প্রতি চার বছরে একবার আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নুৎপাত হয়। তাছাড়া দেশটিতে ভূমিকম্প একটা সাধারণ ব্যাপার।
আইসল্যান্ড দেশ হিসাবে ছোট হলেও এটা পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ। মাথাপিছু বার্ষিক আয় ৫৫ হাজার মার্কিন ডলার। দেশে বিদ্যমান বিশাল জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের কাঠামো ও ভূগর্ভস্থ নবায়নযোগ্য জ¦ালানির পরিমাণ প্রায় অশেষ। মজুদের ভিত্তিতে আইসল্যান্ডে মাথাপিছু হিসাবে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বিদ্যুত উৎপাদিত হয়।
হোটেলের রুমে লাগেজ রেখেই খেতে বেরোলাম। সামনেই সারি সারি হোটেল। এর মাঝেই আলী বাবা হালাল রেষ্টুরেন্টের সাইন চোখে পড়লো। তবে যেহেতু আমার সঙ্গীদের সবাই আমেরিকান তাই পাশেই একটা বড় হোটেলে গিয়ে খাবার অর্ডার দিলাম।
হালাল রেষ্টুরেন্ট না হলে আমি সাধারণত মাছের অর্ডার দিই। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। খাবার আসলো সামুদ্রিক মাছের বড় দুটি ফিলেট সাথে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। বাটিতে সালাদ। আলাদা সসের বোতল এবং লেবুর টুকরো। ড্রিঙ্কস হিসাবে বোতলের পানি দিতে বল্লাম। সুন্দরী ওয়েট্রেস মৃদু হেসে বল্লো তুমি চাইলে বোতলজাত পানি দিতে পারি। তবে শুনে খুশী হবে আইসল্যান্ডের পানি বিশুদ্ধতার জন্য জগদ্বিখ্যাত। কোন প্রকার বিশুদ্ধকরণ ছাড়াই এই পানি ঘরে ঘরে সরবরাহ করা হয়। তাই টেবিলের জগে রাখা পানি তুমি নিশ্চিন্তে খেতে পারো।
ক্ষুধার্ত ছিলাম তাই পেট পুরেই খেলাম। শীতের দেশ। তাই খাবার শেষে এক কাপ কফি দিতে বল্লাম। বিল এলো ৩ হাজার ৩২৯ আইসল্যান্ড ক্রোনার (প্রায় ২৮ ডলার)।
আইসল্যান্ড খুব খরুচে দেশ। সব কিছুই অগ্নিমূল্য। ট্যুরিস্ট ক্লাস হোটেল নিতে হয়েছে প্রতি রাতের জন্য ২৫০ ইউএস ডলার। সে যাক সারা দিনের ভ্রমণে সবাই ছিলো ক্লান্তশ্রান্ত। পরদিন থেকে শুরু হবে আমাদের আইসল্যান্ড দেখা। তাই সেদিনের মত সবাই হোটেলে ফিরে গেলাম বিশ্রামের জন্য।